ইনজেকশন, ইলেকট্রিক শক ও গ্যাসের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে চলতি বছরে অর্থাৎ ২০২২ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বেগ পোহাতে হচ্ছে দেশটিকে। এক-তৃতীয়াংশ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। এমনকি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ক্ষেত্রে বৈষম্যও দেখা গেছে।
দ্য ডেথ পেনাল্টি ইনফরমেশন সেন্টারের (ডিপিআইসি) এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনি তথ্য। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে সমস্যা দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ২০টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রচেষ্টার মধ্যে ৭টিতেই সমস্যা দেখা গেছে। রায় কার্যকরে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়েছে।
আলাবামা অঙ্গরাজ্যে এক আসামির দণ্ড কার্যকর করতে ইনজেকশন দিতে গিয়ে তিন ঘণ্টার বেশি সময় নিয়েছে জল্লাদরা, যা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ছয় রাজ্যে ১৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এই সংখ্যাটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। ডিআইপিসি পরিচালক রবার্ট দুনহাম বলেন, ‘যেসব তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে, সেই অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর কমে গেছে। ’
গবেষণার ফলাফলে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডিপিআইসি জানায়, অযোগ্যতা ও প্রোটোকল অনুসরণ করতে ব্যর্থতা বা ত্রুটির কারণেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আইডাহো, ওহিও, টেনাস ও দক্ষিণ ক্যারোলিনায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রোটোকল মানা হচ্ছে না।
ওয়েস্টার্ন রিসার্ভ ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক মাইকেল বেনজা বলেন, ‘ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও এতে চিকিৎসকদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এই কারণেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে সমস্যা হচ্ছে। জল্লাদদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। ’
এক বিবৃতিতে দুনহাম বলেন, ‘৪০ বছর পরও রাজ্যগুলো তাদের প্রমাণে ব্যর্থ হচ্ছে। ’
ডিপিআইসির প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের ২৭টি রাজ্যে কাগজে কলমে মৃত্যুদণ্ড রায় দেওয়া হয়। কাগজে কলমে থাকলেও ক্যালিফোর্নিয়া, অরেগন ও পেনসিলভেয়াতে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া রয়েছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে অরেগন গভর্নর কেট ব্রাউন রাজ্যের ১৭ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ড অনৈতিক। এই বন্দিদের পুনর্বাসন করা প্রয়োজন। এ জন্যই এমনটা করা হয়েছে।